ওয়েব পেনেট্রেশন টেস্টিং (Web Penetration Testing) হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের নিরাপত্তা যাচাই করা হয়। এটি আক্রমণকারীদের মতো আচরণ করে দুর্বলতা চিহ্নিত করে এবং ঝুঁকি কমানোর সুপারিশ প্রদান করে।
নিচে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বাংলা ভাষায় তুলে ধরা হলো:
১.১. লক্ষ্য নির্ধারণ ও পরিকল্পনা:
উদ্দেশ্য নির্ধারণ: কোন দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং কেন? যেমন: OWASP Top 10, PCI DSS এর সাথে সামঞ্জস্যতা।
পরিসীমা নির্ধারণ: কোন ওয়েবসাইট, ডোমেইন, API, বা IP ঠিকানাগুলো পরীক্ষা করা হবে।
নিয়মাবলী নির্ধারণ: কী ধরনের পরীক্ষা চালানো যাবে এবং কী কী সীমাবদ্ধতা থাকবে।
আইনি অনুমতি: ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন পরীক্ষা করার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমতি নিতে হবে।
২. তথ্য সংগ্রহ (Reconnaissance)
২.১. প্যাসিভ তথ্য সংগ্রহ:
WHOIS Lookup: ডোমেইন মালিকানার তথ্য সংগ্রহ।
DNS রেকন: সাবডোমেইন, MX রেকর্ড, এবং অন্যান্য DNS তথ্য অনুসন্ধান।
Google Dorking: সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে গোপন তথ্য খুঁজে বের করা (যেমন: এক্সপোজড ফাইল, লগইন প্যানেল)।
সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পাবলিক ডেটা: সামাজিক মাধ্যম বা অনলাইনে পাওয়া তথ্য সংগ্রহ।
২.২. সক্রিয় তথ্য সংগ্রহ:
নেটওয়ার্ক স্ক্যানিং: nmap ব্যবহার করে ওপেন পোর্ট এবং অ্যাকটিভ সার্ভিস চিহ্নিত করা।
ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ফিঙ্গারপ্রিন্টিং: Wappalyzer বা WhatWeb ব্যবহার করে টেকনোলজি শনাক্ত করা।
ডিরেক্টরি এবং ফাইল এনুমারেশন: Dirb বা Gobuster ব্যবহার করে গোপন ডিরেক্টরি এবং ফাইল খুঁজে বের করা।
৩. দুর্বলতা বিশ্লেষণ (Vulnerability Assessment)
৩.১. স্বয়ংক্রিয় স্ক্যানিং:
Burp Suite, OWASP ZAP, বা Acunetix এর মতো টুল ব্যবহার করে সাধারণ দুর্বলতা চিহ্নিত করা (যেমন: SQL Injection, XSS)।
৩.২. ম্যানুয়াল বিশ্লেষণ:
ইনপুট প্যারামিটার পরীক্ষা: GET, POST, কুকিজ, হেডারস পরীক্ষা করা।
সেশন ম্যানেজমেন্ট বিশ্লেষণ: সেশন টোকেন বা কুকিজের দুর্বলতা চেক করা।
৪. এক্সপ্লয়টেশন (Exploitation)
ইনপুট ভ্যালিডেশন দুর্বলতা পরীক্ষা: SQL Injection, Command Injection।
XSS (Cross-Site Scripting): Persistent, Reflected, এবং DOM-Based XSS এর জন্য পরীক্ষা।
Authentication এবং Authorization: দুর্বল পাসওয়ার্ড, অ্যাকাউন্ট এনুমারেশন, এবং Privilege Escalation এর পরীক্ষা।
ফাইল আপলোড দুর্বলতা: ফাইল আপলোডের মাধ্যমে সার্ভারে অ্যাক্সেস পাওয়া সম্ভব কি না তা চেক করা।
ব্যবসায়িক যুক্তি (Business Logic): পেমেন্ট প্রসেসিং বা ব্যবহারকারীর অনুমতি সম্পর্কিত ত্রুটি পরীক্ষা করা।
৫. পোস্ট-এক্সপ্লয়টেশন (Post-Exploitation)
তথ্য চুরি (Data Exfiltration): সংবেদনশীল তথ্য বের করার চেষ্টা।
অধিকার বৃদ্ধি (Privilege Escalation): উচ্চতর অ্যাক্সেস পাওয়ার চেষ্টা।
স্থায়ীত্ব (Persistence): সার্ভারে নিয়মিত অ্যাক্সেস বজায় রাখা সম্ভব কি না তা পরীক্ষা।
৬. রিপোর্টিং (Reporting)
৬.১. ফলাফল সংকলন:
পরিচালনা সংক্ষেপ (Executive Summary): উচ্চ পর্যায়ের সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ: বিস্তারিত প্রমাণ সহ দুর্বলতার তালিকা।
৬.২. ঝুঁকি মূল্যায়ন:
দুর্বলতাগুলোর গুরুত্ব নির্ধারণ (Critical, High, Medium, Low)।
ব্যবসার উপর এর প্রভাব বিশ্লেষণ।
৬.৩. সুপারিশ:
সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ প্রদান।
OWASP বা NIST এর মতো মানদণ্ড অনুসরণ করা।
৭. সমস্যা সমাধান (Remediation Support)
উন্নয়ন এবং আইটি টিমের সাথে কাজ করে দুর্বলতা সমাধান করা।
পুনরায় পরীক্ষা (Retesting) করে নিশ্চিত হওয়া।
৮. পরবর্তী পদক্ষেপ (Post-Engagement)
তথ্য সুরক্ষা: টেস্টিং চলাকালে সংগৃহীত ডেটা ধ্বংস করা।
শিক্ষণ এবং উন্নতি: ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষণীয় বিষয়গুলি নথিভুক্ত করা।
চলমান পরীক্ষা: নিয়মিত পরীক্ষা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার আপডেট নিশ্চিত করা।
কিছু সাধারণ টুলস (Tools):
তথ্য সংগ্রহের জন্য: Amass, theHarvester, Shodan স্ক্যানিংয়ের জন্য: nmap, Nikto, Burp Suite এক্সপ্লয়টেশনের জন্য: sqlmap, Metasploit রিপোর্টিংয়ের জন্য: Dradis
যেকোন সমস্যার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন। ধন্যবাদ...।।